জীবনের গল্প১২
জীবনের গল্প-১১ শেষাংশ↓↓
জীবনের গল্প-১২ আরম্ভ↓↓
বিয়ের পরদিন মেয়েটি বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকে আমার আর কিছুই ভালো লাগছিল না। সেদিন আর মিলেও গেলাম না। কানাইকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম বড় দাদার বাসায়। সেখান থেকে বাসায় ফিরলাম সন্ধ্যার পর।
পরদিন সকালে কানাইকে সাথে নিয়ে দুইজনে মিলে গেলাম। আমি আর কানাই কাজ করছিলাম। এমন সময় মিলের দারোয়ান আমার সামনে এসে বললো, “তোর লোক এসেছে।”
দারোয়ানের কথায় হঠাৎ চমকে গেলাম! চমকে গিয়ে মিলের বাইরে গিয়ে দেখি ফতুল্লা মিলন টেক্সটাইল মিলের সাত্তার মিস্ত্রি। উনার সাথে মিলন টেক্সটাইল মিলে অনেকদিন কাজ করেছিলাম। এই সাত্তার মিস্ত্রিকে আমি ওস্তাদ বলেই ডাকতাম।
মিলন টেক্সটাইল মিল বন্ধ হয়ে যাবার পর উনি চেলে গেলেন বাড়িতে। উনার বাড়ি কুমিল্লা। এরপর থেকে উনার সাথে আমার যোগাযোগ বন্ধ একরকম বন্ধই ছিলো। অনেকদিন পর উনার সাথে এ-ই দেখা।
সাত্তার ওস্তাদের সামনে গিয়ে হাত জোড়ে নমস্কার জানালাম। উনি আমার নমস্কার গ্রহণ করে বললো, “তোমার বড়দাদা নিমাই বাবু কোথায়?”
বললাম, “দাদা তো মিলের ভেতরে কাজ করছে।”
উনি সাত্তার মিস্ত্রি আমার বড় দাদাকে ডেকে আনতে বললো। আমি কানাইকে মিলের ভেতরে পাঠালাম, বড় দাদাকে ডেকে আনতে।
এই ফাঁকে সাত্তার ওস্তাদের সাথে অনেক কথা হলো। কীভাবে আমাদের ঠিকানা সংগ্রহ করলো। কীভাবে এখানে আসলো। এখন কোথায় কী করছে ইত্যাদি বিষয়ে।
সাত্তার ওস্তাদ বললো, ”তিনি ফরিদপুর গঙ্গাবর্দী নামে এক জায়গায় একটা মিলে কাজ করছে। মিলের নাম, আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ টেক্সটাইল মিল। মিলটি দুই বছরের জন্য মিলন সাহেবের ভাড়া নেওয়া। এখানে এসেছেন আমাকে সেই মিলে নিয়ে যেতে।”
এরমধ্যেই আমার বড় দাদা মিল থেকে বেরুলো। সাত্তার ওস্তাদকে দেখে কোলাকুলি করলো।
তারপর সাত্তার ওস্তাদ-সহ আমরা মিলের সাথে থাকা একটা চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম। চা-বিস্কুটের ওর্ডার দিলাম, চা-বিস্কুট আসলো।
চা-বিস্কুট খেতে খেতে সাত্তার ওস্তাদ আমার বড় দাদাকে বললো, “নিমাই দা, আমি এখন মিলন সাহেবের ভাড়া নেওয়া এক মিলে চাকরি করি। মিলটা ফরিদপুর গঙ্গাবর্দী। সেখানে ভালো ড্রয়ার ম্যান নেই। ড্রয়ার ম্যানের অভাবে মিলে ঠিকমতো উৎপাদন হচ্ছে না। তাই মিলন সাহেব নিতাইকে ওই মিলে নিতে পাঠিয়েছে। এখন আপনার সম্মতি পেলেই আমি নিতাইকে সাথে নিয়ে ফরিদপুর রওনা হবো।”
আমার বড়দাদা সাত্তার ওস্তাদের সব কথা শুনে বললো, “ও-তো এখানে পার্মানেন্ট চাকরি করছে। আবার বর্তমানে মা’কে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকছে। তাছাড়া ও এখান থেকে হঠাৎ চলে গেলে, মিল বন্ধ হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।
যদি ও ফরিদপুর যাতে চায়, তাহলে এই মিলের জন্য ওর মতো একজন ড্রয়ার ম্যান এখানে দিয়ে যেতে হবে। তা না হলে, ওর বেতনের টাকা মিল মালিক আটকে দিবে। আর ওযদি ওখানে যায়, তাহলে ওর ভাড়া নেওয়া বাসাও ছেড়ে যেতে হবে। তারজন্য ওকে অগ্রীম বাবদ অন্তত ২০০০/= টাকা দিতে হবে। যাতে ও এদিকের দেনা-পাওনা সবকিছু মিটিয়ে যেতে পারে।”
বড়দা’র কথায় সাত্তার ওস্তাদ বললো, “ঠিক আছে দাদা, আমি আজই এ-বিষয়ে মিলন সাহের সাথে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করে আগামীকাল আবার আপনার কাছে আসছি।”
এই বলেই সাত্তার ওস্তাদ সেদিনের মতো আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকা চলে গেলো। এরপর আমার বড়দাদা আমাকে বললো, “তুই মিলের কাজ সেরে এই মিলের জন্য আজই একজন ড্রয়ার ম্যান খুঁজে বের কর। যাতে এই মিলের কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়।”
বড়দা’র কথামতো আমি মিলের কাজ সেরে কানাইকে নিয়ে চলে গেলাম, ফতুল্লা আগের মিলন টেক্সটাইল মিল এলাকায়। সেখানে গিয়ে পরিচিত একজন ড্রাইভার ম্যানের সাথে কথা বলি। উনি কিল্লারপুল ফাইন টেক্সটাইল মিলে আমার কাজের জায়গায় যেতে রাজি হলো।
পরদিন সাত্তার ওস্তাদ আমার জন্য মিলন সাহেব থেকে ২০০০/= টাকা অগ্রীম বাবদ নিয়ে ফাইন টেক্সটাইল মিলে আসলো।
মিলে এসে আমার বড়দা’র হাতে ২০০০/=টাকা দিয়ে বললো, “নিমাই দাদা আমি নিতাইকে নিয়ে আগামীকালই ফরিদপুর রওনা দিতে চাই।”
আমার বড়দা বললো, “আগামীকাল যেতে পারবে না। দুইদিন পর যেতে পারবে। এই সময়ে মধ্যে মিলে একজন ড্রয়ার ম্যান দিতে হবে এবং ওর বাসা ভাড়া পরিশোধ করে বাসা ছেড়ে আমার বাসায় সবকিছু পৌঁছাতে হবে। তাহলেই আমি এই ফাইন টেক্সটাইল মিলের মালিক ও ম্যানেজারের কটুকথা থেকে রেহাই পাবো।”
আমার বড় দাদার কথায় সাত্তার ওস্তাদ রাজি হয়ে সেদিনের মতো বিদায় নিয়ে চলে গোলো। তারপর বড়দা সাত্তার ওস্তাদ থেকে পাওয়া ২০০০/= টাকা আমার হাতে দিয়ে বললো, “এই মিলের জন্য একজন ড্রয়ার ম্যান আগামীকালই নিয়ে আসতে। আর বাসা ভাড়া বুঝিয়ে দিয়ে বাসার মালা-মাল গোয়ালপাড়া বাসায় নিয়ে যেতে।”
দাদার কথামতো আমি তা-ই করলাম। এই দিনই শ্যামসুন্দর সাহার বাসার ভাড়া পরিশোধ করে রাতা-রাতিই বাসার মালা-মাল দাদার বাসায় নিয়ে গেলাম। মাকেও ফরিদপুর যাওয়ার ব্যাপারে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম।
পরদিন সকালবেলায় ফতুল্লা গেলাম। ফতুল্লা থেকে ওই ড্রয়ার ম্যানকে সাথে নিয়ে কিল্লারপুল ফাইন টেক্সটাইল মিলে আসলাম। আমার কাজটা ওই লোককে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিলাম। তারপর আমার পনেরো দিনের মতো কাজের পাওনা টাকা বড়দা’র কাছে দিয়ে দিতে ফাইন টেক্সটাইল মিলের ম্যানেজার সাহেবকে অনুরোধ করলাম।
তারপর ম্যানেজার সাহেব ও মিলের সবার কাছে বলেকয়ে মিল থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় গেলাম। পরদিন অগ্রীম পাওয়া ২০০০/= টাকা থেকে ১০০০/= মায়ের হাতে দিয়ে কাঁথা-বালিশের গাট্টি-সহ কানাইকে নিয়ে সাত্তার ওস্তাদের কথামতো ঢাকা ফুলবাড়িয়ার উদ্দেশে রওনা দিলাম।
ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডেই সাত্তার ওস্তাদ আমাদের জন্য অপেক্ষায় থাকবে বলে বলেছিল। আমরা ফুলবাড়িয়া পৌঁছার আগেই সাত্তার ওস্তাদ আমাদের জন্য টিকিট সংগ্রহ করে আমাদের জন্য অপেক্ষা দাঁড়িয়ে করছিল। আমরা ফুলবাড়িয়া পৌঁছার সাথে সাথে সাত্তার ওস্তাদ আমাদের সামনে এসে নাজি হলো। তারপর ফুলবাড়িয়া থেকে কিছু হাল্কা-পাতলা খেয়ে বাসে উঠে নিজেদের সিটে গিয়ে বসলাম।
বাস থেকে ফফরিদপুর রাজবাড়ীর পৌঁছালাম সন্ধ্যার একটু আগে। বাস থেকে নেমে রিকশা চড়ে গেলাম, গঙ্গাবর্দী আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ টেক্সটাইল মিলে। এই মিলটি ফরিদপুর শহরের এক বড় ব্যবসায়ীর। শখ করে নিজের বাবার নামে মিলের নামকরণ করে।
মিলের মেশিনগুলো ছিলো ইন্ডিয়ান। সেদিন মিলের শ্রমিকদের ম্যাচে রাতের খাবার সেরে শুয়ে থাকলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে মিলের পাশে থাকা একটা চায়ের দোকান থেকে চা-পানি খেয়ে মিলের ভেতরে গেলাম। মিলের সবাই আমাদের দুইজনকে দেখে কেমন যেন হাঁকা-হাঁকি করতে ছিল।
মিলের শ্রমিকদের ধারণা ছিল, আমরা হয়তো দুইদিনও এই মিলে কাজ করতে পারবো না। এরকম ধারণা নিয়েই শ্রমিকরা হাঁকা-হাঁকি করেছিল। যখন আমরা দুইজনে আমাদের কাজ রেডি করে কাজ করা শুরু করলাম, তখন মিলের সবাই আমাদের দুইজনের চারপাশে এসে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাজের নমুনা দেখছিল।
আমি যেই কাজটা করতাম, সেই কাজে আমি খুবই দ্রতগামী ছিলাম। একসময় পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে যতগুলো প্রাইভেট টেক্সটাইল মিল ছিলো, সেসব মিলে যত ড্রয়ার ম্যান ছিলো, সবার থেকে আমিই ছিলাম সেরা ড্রয়ার ম্যান।
তাই ফরিদপুর গঙ্গাবর্দী আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ টেক্সটাইল মিলেও আমার দ্রুত কাজ করা দেখে মিলের সবাই অবাক হয়ে গেলো। প্রথম কাজটা করেই প্রশংসার ফুলঝুরি কুড়িয়ে ফেললাম। সাত্তার ওস্তাদও খুশি হয়ে গেলো।
এরপর ওই মিলে আমিই হয়ে গেলাম সবার পছন্দের মানুষ। মিলের বাইরেও ছিল আমার প্রশংসা। তাছাড়া ঢাকার লোক বলে একটা কথা তো ছিলোই। যেখানেই যেতাম, সম্মান পেতাম। মিলের ভেতরেও থাকতাম স্পেশালভাবে।
সেই মিলের আশ-পাশের বাড়িঘরের অনেক ছেলেকেও কাজ শিখাইয়েছিলাম। ফরিদপুর গঙ্গাবর্দী আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ টেক্সটাইল মিলে প্রায় ছয়মাসের মতো ঠিকমতো কাজ করেছিলাম। এরপর একসময় মিলন সাহের ওই মিলে সূতা দেওয়া বন্ধ করে দিলে, সাত্তার ওস্তাদ-সহ আমি আর কানাই নারায়ণগঞ্জ ফিরে আসি।
ক’দিন ঘুরে-ফিরে আবার কিল্লার পুল ফাইন টেক্সটাইল মিলে কাজ নিয়ে নিই। ফাইন টেক্সটাইল মিলেও আমি সবার প্রিয় মানুষ ছিলাম। মিলের অধিকাংশ শ্রমিক ছিলো বিক্রমপুর মালিকের পাড়াপ্রতিবেশি ও নিকটাত্মীয় স্বজন।
তখনকার সময়ে এদেশে এতো গার্মেন্টস ছিলো না। ছিলো শুধু প্রাইভেট টেক্সটাইল মিল। তাই তখন কাজের যেমন চাহিদা ছিলো, কাজের লোকের সম্মানও ছিলো। সেই সম্মানের সুবাদে অনেক শ্রমিকদের বাড়িতে যাওয়ার আমন্ত্রণ নিমন্ত্রণ পেতাম। অনেকের বাড়িতে যেতাম। আবার অনেকের বাড়িতে যেতাম না।
ফাইন টেক্সটাইল মিলেরই আমার এক সাগরেদের বাড়ি ছিলো বিক্রমপুর তালতলা সুবচনী সংলগ্ন নয়াবাড়ি গ্রামে। ওর নাম ছিল কালাম মিয়া। কালাম ছাড়াও আরও অনেক লোকই ছিলো সুবচনী এলাকার। তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ছিল কালাম মিয়া।
কালাম আমাকে ওস্তাদ ওস্তাদ বলের ডাকতো। ঈদ আসলে ঈদের বন্ধে ওদের বাড়িতে যাবার জন্য অনুরোধ করতো। এক ঈদকে সামনে রেখে ওদের বাড়িতে যাবো বলে কথা দিলাম। চার-পাঁচ দিন পরই ঈদ-উল-ফিতর। একসময় মিলের সবাই ঈদের বন্ধ পেয়ে যার যার বাড়ি গেলো।
কালামও বাড়ি যাবার আগে বারবার আমার হাতে ধরে ওদের বাড়িতে যাওয়া জন্য অনুরোধ করলো। তখন কালামকে বলেছিলাম, “ঈদের দিন যেকোনো সময় আমি আর কানাই তোমাদের বাড়িতে হাজির হয়ে যাবো। এব্যাপারে তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো।”
আমার কথা বিশ্বাস করে কালাম মিল থেকে ঈদের আগের দিন বাড়ি গেলো। বাড়ি গিয়ে ওর মা-বাবার কাছে বললো, “ঈদের দিন আমাদের বাড়িতে নারায়ণগঞ্জ থেকে আমার ওস্তাদ আসবে।”
ওই কথা এক কান দুই কান তিন কান হয়ে পুরো নয়াবাড়ি গ্রামে ছড়িয়ে পড়লো।
ওদের বাড়ি যেতে হলে ফতুল্লা লঞ্চঘাট থেকে লঞ্চে চড়ে সুবচনী বাজারে নামতে হয়। তারপর সুবচনী থেকে নৌকায় চড়ে নয়াবাড়ি গ্রামে যেতে হয়। তাই কালাম ঈদের দিন সকালবেলা সুবচনী বাজারে এসে পরিচিত সব নৌকার মাঝিদের বলে রেখেছিল, “নারায়ণগঞ্জ থেকে আমার ওস্তাদ আসবে। ওস্তাদের কাছ থেকে যেন নৌকা ভাড়া রাখা না হয়।”
ঈদের দিন আমি মায়ের কাছে বেড়াতে যাবো বলে কানাইকে সাথে নিয়ে সকালবেলা বাসা থেকে বের হয়ে ফতুল্লা লঞ্চঘাটে আসি। তখন ফতুল্লা থেকে সুবচনীর ভাড়া ছিলো মাত্র ১৭ টাকা। লঞ্চঘাটে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ঢাকা থেকে লঞ্চ ছেড়ে এসে ফতুল্লা লঞ্চঘাটে ভিড়লো।
আমরা লঞ্চে উঠলাম। সুবচনী যেতে যেতে দুপুর পার হয়ে গেলো। লঞ্চঘাটে লঞ্চ ভিড়লো। আমরাও লঞ্চ থেকে নামলাম। সামনেই দেখি কালাম দাঁড়িয়ে আছে।
জিজ্ঞাসা করলাম, “কখন থেকে এখানে দাঁড়িয়ে আছো?” কালাম বললো, “আমি ওস্তাদ অনেকক্ষণ যাবত এখানে আনাগোনা করছিলাম, আপনাদের অপেক্ষায়।”
তারপর কালামকে নিয়ে এক চায়ের দোকানে গেলাম। চা-বিস্কুট খেয়ে বাজারের ভেতরে গেলাম। কালামকে জিজ্ঞাসা করলাম, “এখানে মিষ্টির দোকান কোথায়?”
কালাম আমাদের মিষ্টির দোকানে নিয়ে গেলো। দুই সের মিষ্টি নিলাম। কালামের মা-বাবার জন্য পান-সুপারি কিনলাম। বেশি করে সিগারেট কিনে নিলাম। তারপর ওদের নিজেদের নৌকা চড়ে ওদের বাড়ির ঘাটে নামলাম।
আমরা কালামদের বাড়িতে যাবার আরও অনেক আগে থেকেই আমাদের দেরি দেখে ওর মা-বাবা, বড় ভাই-সহ বাড়ির সবাই পায়চারি করতে ছিল। আমরা ওদের বাড়ির ঘাটে যাবার সাথে সাথে পুরো নয়াবাড়ির ছোট-বড় অনেক মানুষ বাড়ির ঘাটে জড়ো হয়ে গেলো। এতো মানুষ দেখে আমি যেন লজ্জায় পড়ে গেলাম! মাথা নিচু করে কালামের সাথে ওদের ঘরে গিয়ে বসলাম।
ঘরে গিয়ে বসার সাথে সাথে ওর মা-বাবা, বড় ভাই ও বোনের সাথে পরিচয় হলো। তারপর চিনির সাথে লেবুর শরবত সামনে এসে গেলো। আসলো আমাদের টাকা দিয়ে কেনা মিষ্টিও। খেলাম শরবত। খেলাম মিষ্টি।
এরপর কালামের মা আমাদের হাতমুখ ধুয়ে আসার জন্য বললো। কলাম হাতমুখ ধোয়ার জন্য আমাদের নিয়ে গেলো, একটা পুকুরের সিঁড়ি ঘাটে। পুকুরের সিঁড়ি ঘাটটা হলো এক হিন্দু ঠাকুর বাড়ির। পুকুর ঘাট থেকে হাত-পা ধুয়ে কালামদের বাড়িতে আসলাম। ভাত খেলাম। কিছুক্ষণ বিশ্রাম করলাম।
চলবে...
ব্লগ ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
nitaibabunitaibabu@gmail.com