পোস্টগুলি

জুন ২৯, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

হিন্দুধর্মে চার যুগ

ছবি
  🕉️ হিন্দুধর্মে চার যুগ 🕉️ এই কলিযুগে মানুষের ধর্ম কী? যুগধর্ম কী? যুগধর্ম হল যুগের ধর্ম । হিন্দুধর্মে চারটি যুগ রয়েছে যথাঃ— সত্যযুগ, ত্রেতাযুগ, দ্বাপরযুগ ও কলিযুগ । বর্তমান সময় কলিযুগের অন্তর্ভুক্ত । প্রত্যেক যুগে ভগবানকে সন্তুষ্টি বিধানের জন্য আলাদা ভাবে ধর্মানুষ্ঠান করা হত। এ সম্পর্কে শ্রীমদ্ভাগবতের (১২/৩/৫২ শ্লোক) এ শুকদেব গোস্বামী পরিক্ষিত মহারাজ কে বলেন— কৃতে যয্ঞায়তো বিষ্ণুং ত্রেতায়াং যজতো মখৈঃ। দ্বাপরে পরিচর্যায়াং কলৌ তদ্ধরিকীর্তনাত্‌॥ অর্থাৎ, সত্যযুগে বিষ্ণুকে ধ্যান করে, ত্রেতাযুগে যজ্ঞের মাধ্যমে যজন করে এবং দ্বাপরযুগে অর্চনাদি করে যে ফল লাভ হত, কলিযুগে কেবলমাত্র “হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র” কীর্তনে সেই সকল ফল লাভ হয়। সত্যযুগ যুগধর্ম ছিল ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান। বৈদিক শাস্ত্রমতে ধর্মের চারটি স্তম্ভ — সত্য, দয়া, তপ, শৌচ — সবই বর্তমান ছিল। মানুষের আয়ুষ্কাল ছিল ১ লক্ষ বছর। হাজার হাজার বছর ধ্যান (তপস্যা) করে ভগবানকে লাভের চেষ্টা হত। ত্রেতাযুগ যুগধর্ম ছিল যজ্ঞ । যজ্ঞে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করে ভগবানকে আহ্বান করা হত। মানুষের ...

অযত্নে অবহেলায় আজও দাঁড়িয়ে আছে মোগল স্থাপত্য ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ কেল্লা

ছবি
  অযত্নে অবহেলায় আজও দাঁড়িয়ে আছে মোগল স্থাপত্য ঐতিহ্যবাহী হাজীগঞ্জ কেল্লা প্রাচ্যের ডান্ডি নামে খ্যাত নারায়ণগঞ্জে রয়েছে মোগল আমলের অনেক স্থাপনা। তার মধ্যে একটি হলো হাজীগঞ্জ দুর্গ বা হাজীগঞ্জ কেল্লা । দুর্গটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১৪.৬৮ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। এটি নারায়ণগঞ্জ থেকে চিটাগাং রোড যেতে মাঝপথে নবীগঞ্জ গুদারাঘাট -এর একটু সামনেই, হাজীগঞ্জ ফায়ার ব্রিগেডের পরেই এই কেল্লার অবস্থান। নারায়ণগঞ্জ সিটির হাজীগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক কেল্লাটি আজও দাঁড়িয়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। একসময় এটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত ছিল। নারায়ণগঞ্জ-চিটাগাং রোড ভায়া ডেমড়া পথ ধরে চলতে গেলে এই কেল্লাটি চোখে পড়ে। স্বাধীনতার আগেই কেল্লাটির চারপাশে গড়ে উঠেছিল টিনসেট পাটের গোডাউন , কারণ তখন নারায়ণগঞ্জ ছিল পাট ও বস্ত্রশিল্পের অন্যতম কেন্দ্র। বর্তমানে যদিও পাটের সেই সুনাম নেই, তবুও গোডাউনগুলো এখনও সচল। কেল্লাটি আজ এই সব গুদামের আড়ালে হারিয়ে যেতে বসেছে। কেল্লার ইতিহাস ও স্থাপত্য জানা যায়, ঢাকা শহরকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে সপ্তদশ শতকের শুরুতে এই কেল্লাটি ন...

ছোটবেলার স্মৃতিগুলো

ছবি
  ছোটবেলার স্মৃতিগুলো নোয়াখালী জেলার মাহাতাবপুর গ্রামে ছিল আমার বাপ-দাদার ভিটেমাটি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টা আমরা সপরিবারে গ্রামের বাড়িতেই ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি তখন ৮/৯ বছরের নাবালক শিশু। মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হবার আগে এবং পরের সময়েও এদেশে টাকার খুবই দাম ছিল। মানও ছিল। যাঁর-তার কাছে এতো এতো টাকা-পয়সা ছিল না। কথায় আছে, "যাঁর কাছে হাজার টাকা ছিল, তাঁর টাইটেল ছিল হাজারী।" আর যাঁর কাছে লক্ষ টাকা ছিল, তাঁকে লোকে বলতো "লাখপতি" । তখনকার সময়ে কোটিপতির তালিকায় এদেশে কারোর নাম ছিল না বলেই মনে হয়। গ্রামের পূজোর চিত্র আমি ছোট থাকতে দেখেছি, আমাদের গ্রামে দুর্গাপূজা হতো না। দুর্গাপূজা হতো টাউনে। গ্রামে হতো লক্ষ্মীপূজা । এর কারণ, তখনকার সময়ের টাকার খুবই দাম ও মান ছিল। দুর্গাপূজা করতে হলে অনেক টাকা-পয়সার প্রয়োজন হতো, যা সেসময় পুরো গ্রামের পরিবারগুলো মিলেও বহন করতে পারতো না। তাই আমাদের গ্রামের মতো অনেক গ্রামেই তখন কেউ দুর্গাপূজা করতো না বা সাহসও পেতো না। আর্থিক দুরবস্থার কারণে দুর্গাপূজার মতো বড় উৎসবটি বাদ পড়ে যেত, কিন্তু লক্ষ্মীপূজা ছিল আমাদের ...

অবহেলিত প্রাণী কুকুরের ভালবাসা

ছবি
অবহেলিত প্রাণী কুকুর অবহেলিত প্রাণী কুকুর কুকুর প্রাণিগুলো পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের কাছে অবহেলিত। এদের মধ্যে নামমাত্র কিছু উঁচু গোত্রের অল্পসংখ্যক প্রাণী থাকে আদরে। আর সবই থাকে অনাদরে আর অবহেলায়। এই প্রাণীটির নাম কুকুর। আমরা অনেকেই সোজা কথায় কুত্তা বলে ডাকি। এদের ইংরেজিতে কি যেন বলে? তা লিখে আমি সবাইকে ছোট করতে চাই না। কারণ, এগুলোর ইংরেজি শব্দ লিখবার শিক্ষাগত যোগ্যতা আমার নেই। শুধু জানি, এগুলো কুকুর, কথা বলতে পারে না। কথা না বলতে পারলেও, এরা মানুষের চোখ এবং হাতের ইশারা সবই বুঝে। বুঝে না শুধু বেঈমানি। থাকে না কোনো মিথ্যা প্রচারণায়। এদের মতন আরও অনেক-অনেক প্রাণীই আছে, ওরাও আমাদের কাছে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য। এদের নিয়ে আমি কোনও গবেষণা করছি না। আর এদের নিয়ে গবেষণা পর্যালোচনা করার মতো ডিগ্রিও আমার নেই। গবেষণা করার অভিজ্ঞতা ছাড়া, কুকুর-বিড়াল নিয়ে কোনো গবেষণা করা যায় না। যদিও করি, তা হলে সাহায্য নিতে হবে বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগল অথবা উইকিপিডিয়া ও বাংলাপিডিয়ার। এসব সাইটের তথ্য নিয়ে কিছু লিখলে আবার সেই লেখা ব্লগে প্রকাশ হবে না। কেননা, এসব তথ্যানুসন্ধান সাইটগুলোর লিংক ...

শীতলক্ষ্যার বুকে ভেসে থাকা এক ঐতিহ্য

ছবি
  শীতলক্ষ্যার বুকে ভেসে থাকা এক ঐতিহ্য শীতলক্ষ্যা একটি নদীর নাম। যা নারায়ণগঞ্জ শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলছে, যুগ যুগ ধরে। স্বচ্ছ পানির জন্য সুনাম অর্জনকারী শীতলক্ষ্যা নদী বঙ্গদেশের সবার কাছেই পরিচিত। স্বচ্ছ পানির সুনাম বর্তমানে না থাকলেও, নদীর দুই পাড় নিয়ে সুখ্যাতি আজও অখ্যাত রয়ে গেছে। শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ে রয়েছে প্রচুর মিল-ইন্ডাস্ট্রি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আরও অনেক কিছু। এসব নিয়ে লিখে শেষ করা যায় না। তাই আর কিছু লিখলামও না। লিখতে চাই শীতলক্ষ্যা নদীর পানির উপরে ভেসে থাকা বি.আই.ডব্লিউ.টি.সি’র ভাসমান ডকইয়ার্ড নিয়ে। এই ভাসমান ডকইয়ার্ডটিও প্রাচ্যের ডান্ডি নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসের একটা ঐতিহ্য । যা যুগ যুগ ধরে শীতলক্ষ্যা নদী, আর নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য বহন করে চলছে। এই ভাসমান ডকইয়ার্ডটি পানিতে চলাচলকারী জাহাজ, লঞ্চ-ইস্টিমার, কার্গো, ট্রলারসহ আরও বহুরকম নৌযান মেরামত করার সময়োপযোগী স্থান। আমরা সবাই সচরাচর দেখি ডকইয়ার্ড থাকে নদীর পাড় ঘেঁষা খোলা জায়গায়। কিন্তু এটি নদীর পাড় ঘেঁষা কোনও খোলা জায়গা বা ভূমিতে নয়! এটি হলো পানির উপরে ভাসমান (ভেসে থাকা) অবস্থায়। নদীতে চলাচলকারী নৌযান মেরাম...

আমার দরিদ্র জীবন ও অনলাইন জীবনী

ছবি
আমার দরিদ্র জীবন ও অনলাইন জীবনী সারারাত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সকালবেলা আসতাম বাসায়। থাকতাম নগর খাঁনপুর শ্যামসুন্দর শাহের বাড়িতে। (এরমধ্যে দাদাও এসে পড়ল নগর খাঁনপুরে। দাদা কিল্লার পুল সংলগ্ন ফাইন টেক্সটাইল মিলে কাজ নিয়ে কাজ করা শুরু করে। আমি প্রতিদিন রাতে দাদার সাথে তাঁতের কাজ শিখতে যেতাম। কিছুদিনের মধ্যেই তাঁতের কাজ আমার আয়ত্তে চলে আসে। তখন রিকশা চালানো ছেড়ে মিলে তাঁতের কাজ করা শুরু করি।) সেখানে-ই ঘটে গেল আমার জীবনের ভালো লাগার একটা পর্ব। শ্যামসুন্দর মহাশয়ের বাসায়-ই থাকতো এক মেয়ে, ও-ই আমার জীবনের প্রথম ভালো লাগার ভালোবাসা। (তখন সবেমাত্র টেক্সটাইল মিলে কাজ শিখে আমি কাজ করা শুরু করেছিলাম, কিল্লারপুল ফাইন টেক্সটাইল মিলে। সার্ভিস হয়েছে মাত্র ১৮/১৯ মাস। আমার সাথে একজন হেলপার ছিল, নাম ছিল কানাই লাল শাহা। একসময় ফাইন টেক্সটাইল মিলের কাজটা কানাইকে বুঝিয়ে দিয়ে আমি ফতুল্লা কাঠেরপুল ওয়েল টেক্সটাইল মিলে চলে যাই।) সেই ভালো লাগার দায় দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ওকে নিজ হাতে অন্যজনের হাতে তুলে দিতে হয়েছিল। এর কিছুদিন পরে অবিবাহিত থাকা আমার এক বোনের বিবাহ দিয়েছি এই নগর খাঁনপুরে-ই। তাও নগর খা...

নারায়ণগঞ্জের কিছু আঞ্চলিক ভাষার শব্দ

ছবি
নারায়ণগঞ্জের কিছু আঞ্চলিক ভাষা বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ রয়েছে। ৮টি বিভাগে রয়েছে প্রায় ৬৮ হাজার গ্রাম । এই ৬৮ হাজার গ্রামের মানুষ কিন্তু শুদ্ধ বাংলা ভাষায় কথা বলে না। তবে এটা ঠিক যে, তারা শুদ্ধ ভাষা বলতে পারে না — এমন না। অনেকেই পারে, জানে, বোঝে। তবুও মানুষ সাধারণত যেই অঞ্চলের, সে সেই নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। কারণ এই ভাষার মধ্যে লুকিয়ে থাকে তার মাটির টান আর মায়ের ভাষার টান । যেমন— চট্টগ্রামের মানুষ চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। নোয়াখালীর মানুষ নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। আবার বরিশালের মানুষ বরিশালের টানে কথা বলে। যদিও আমার জন্ম নোয়াখালীতে , তবুও আমি নিজেকে নারায়ণগঞ্জের মানুষ বলে দাবি করি। কারণ আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি এই নারায়ণগঞ্জ শহরেই। তাই এখন আমি নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতেই বেশি পছন্দ করি। বাংলাদেশের কয়েকটি অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা আমি জানি এবং বলতে পারি। কিন্তু আজ আমি অন্য অঞ্চলের ভাষা নয়, নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার কিছু জনপ্রিয় ও ব্যবহৃত শব্দ আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। তো চলুন, দেরি না করে আমরা শ...

স্মৃতির সন্ধ্যায় সুপারি গাছের খোলের জুতা

ছবি
স্মৃতির সন্ধ্যায় সুপারি গাছের খোলের জুতা ১৯৬৭ সালের কথা। তখন আমি সদ্য প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হয়েছি। পিঠে বই-স্লেট ঝুলিয়ে প্রতিদিন খালি পায়ে ছুটে যেতাম স্কুলে। ক্লাস শেষ হলে দৌড়ে বাড়ি ফিরে সেগুলো একপাশে ছুঁড়ে রেখে ছুটে যেতাম মাঠে—সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে ডাংগুটি, গোল্লাছুট, নারকেল পাতার বাঁশি বানানো কিংবা সুপারি গাছের খোলের ওপর বসে টানা-টানির খেলায় মেতে উঠতাম। সেই সুপারি গাছের খোল তখন গ্রামের মানুষের জন্য ছিল এক অমূল্য সম্পদ । গৃহস্থের ঘরে কাজে এর ছিলো নানা ব্যবহার—চিকন করে কেটে দড়ি বানিয়ে বাঁশের বেড়া বাঁধা, টুকরি তৈরি, ছনের ছাউনি বাঁধা, কুলা বানানো —এমনকি পায়ের জুতা বানাতেও এর ব্যবহার হতো। আমাদের সময়ে টাকার বড়ই টানাটানি ছিলো। অভাব ছিল যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। নতুন জামা-প্যান্ট বা জুতা কেনার কথা কল্পনাতেও আসতো না। আমার নিজের অবস্থাও ছিল ঠিক তেমন— ছেঁড়া-ফাটা জামা আর খালি পায়ে হাঁটা ছিল জীবনের স্বাভাবিক চিত্র। তবে স্কুলে গিয়ে যখন দেখতাম কিছু ছেলেমেয়ের পায়ে প্লাস্টিকের রঙিন স্যান্ডেল , তখন মন কেমন করে উঠতো। বাড়ি ফিরে কাঁদতাম— “মা, আমাকেও স্যান্ডেল ক...

শীতলক্ষ্যা এখন জীবিত থেকেও মৃত

ছবি
শীতলক্ষ্যা এখন জীবিত থেকেও মৃত শীতলক্ষ্যা এখন জীবিত থেকেও মৃত, শীতলক্ষ্যার পানি এখন আর কেউ স্পর্শ করে না। শীতলক্ষ্যা বাঁচলে যে নারায়ণগঞ্জবাসী বাঁচবে, তা সবাই জানে, কিন্তু বাঁচানোর উদ্যোগ কারও নেই। তবু শীতলক্ষ্যাকে নিয়ে একটু কান্নাকাটি করতে হয়, কারণ: শীতলক্ষ্যার সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক অনেক আগের—স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, যখন আমরা গ্রাম ছেড়ে সপরিবারে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন লক্ষ্মণখোলা সংলগ্ন আদর্শ কটন মিলে আসি তখন থেকেই। স্কুলে আসা-যাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে মিলের প্রাচীর ঘেঁষা নদীর পাড়ের পরিত্যক্ত ছোট জায়গায় কিছু সবজির চারা রোপণ করতাম, শখের বশে। আদর্শ কটন মিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমরা মিলে আর থাকতে পারিনি। মিল ছেড়ে চলে এসেছি ঠিকই, কিন্তু শীতলক্ষ্যা আমাকে ছাড়েনি। ভাগ্যের টানে যেখানেই গিয়েছি, ঘুরেফিরে আবার এই শীতলক্ষ্যার পাড়েই থাকতে হয়েছে আমাকে—কখনো এ পার, কখনো ও পার। শত দুঃখ-কষ্টের মাঝেও প্রতিদিন একবার আমি শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে গিয়ে বসতাম। এখনো আমার সেই নিয়মটা বলবৎ আছে। দূরে থাকি আর কাছে থাকি, শীতলক্ষ্যার সঙ্গে আমার মধুর সম্পর্কটা কিন্তু ছিন্ন হয়নি। সেই সুসম্পর...

নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০ নং ওয়ার্ড: গোদনাইল ও এক জ্যান্ত পাটশিল্প

ছবি
নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০ নং ওয়ার্ড: গোদনাইল ও এক জ্যান্ত পাটশিল্প এই এলাকাটি নারায়ণগঞ্জ সিটি থেকে ৪.৪ কিমি: উত্তরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন। বর্তমানে এই গোদনাইলে গড়ে উঠেছে যত্রতত্র বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসবের মধ্যে রয়েছে রপ্তানিমুখী নীট গার্মেন্ট, ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, রি-রোলিং মিলস্। কোন একসময়ের এশিয়া মহাদেশের বিখ্যাত চার-পাঁচটি টেক্সটাইল মিলস্ও ছিল এখানে। সাথে আছে বহু পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, এই পাট নারায়ণগঞ্জকে এনে দিয়েছিল প্রাচ্যের ডান্ডি উপাধি। আগে নারায়ণগঞ্জে যেখানেসেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যেত বিশাল বিশাল পাটের গোডাউন, দেখা যেত পাটকে বেলিং করার মতো জুটপ্রেস। সারা বাংলাদেশে চট্টগ্রামের পর নারায়ণগঞ্জ ছিল দেশের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক শহর। এখনো এই নারায়ণগঞ্জে সূতা ও রং-এর জন্য সারাদেশে সুখ্যাতি বহাল আছে। বাংলাদেশের যেখানেই টেক্সটাইল মিল আর ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ থাকুক-না-কেন, সূতা রং নারায়ণগঞ্জ থেকেই নিতে হবে, এছাড়া আর উপায় নাই। যদিও কালের বিবর্তনের ফলে বস্ত্রশিল্পের বিলুপ্তি ঘটেছে, রয়ে গেছে কিছু সংখ্যক পাট বেলিং জুটপ্রেস। এমন একটি জুটপ্রেসের সাথে আমার সম্পৃক্ততা অনেক বছর থে...

আমি তাঁতি, মানুষের লজ্জা নিবারণের বস্ত্র তৈরি করি

ছবি
আমি তাঁতি, আমি গর্বিত তাঁতি ছোটবেলায় দেখতাম আমাদের গ্রামে একটা বাড়ি ছিল। বাড়িটার নাম ছিল জুগিবাড়ি। জুগি হলো আমাদের হিন্দুধর্মের একটা জাত বা সম্প্রদায়। জুগি সম্প্রদায়ের কাজ ছিল বস্ত্র তৈরি করা। তাঁরা যেই মেশিন বা কল দিয়ে কাপড় তৈরি করতো, সেটাকে বলা হতো তাঁত। সেই তাঁত চালিয়ে যারা কাপড় উৎপাদন করতো, তাদের বলা হতো তাঁতি বা জুগি। কোন কোন জায়গায় এসব তাঁতিদের ভিন্ন ভিন্ন নামেও ডাকা হতো, এখনো তাঁতিদের এক-এক জায়গায় এক-এক নামে ডাকা হয় অঞ্চলভেদে। কোথাও তাঁতি, কোথাও ঝোলা, কোথাও কারিকর নামেও ডেকে থাকে এই বস্ত্র তৈরি করার জাদুকর তাঁতিদের। তাঁত শিল্প বা বস্ত্র শিল্প নিয়ে কিছু লিখতে হলে, তার আগে সেই শিল্পের জন্মকথা বা ইতিহাস তুলে ধরতে হয়। এই তাঁত শিল্প বা বস্ত্র শিল্পের জন্মলগ্ন আমার জানা না থাকলেও, আমি খুব অল্প বয়স থেকেই এই শিল্পের সাথে জরিত। আর আমার বাবা, কাকা, জ্যাঠা, বড়দা—সবাই এই তাঁত শিল্প বা বস্ত্র শিল্পের সাথে আমার জন্মের বহু আগে থেকেই সম্পৃক্ত ছিলেন। আমাদের সংসার চলতো এই শিল্প থেকে শ্রমের বিনিময়ে উপার্জিত অর্থ দিয়ে। যার কারণে আমি বড় হয়ে নিজেও এই শিল্পের সাথে জড়িয়ে যাই বংশগতভাবে। তা...