জীবনের গল্প-২৭
জীবনের গল্প-২৬ শেষাংশ↓↓
জীবনের গল্প-২৭ আরম্ভ↓↓
আমি তাড়াতাড়ি করে জামাকাপড় পড়ে নিলাম, কানাইতো আগেই রেডি। একটা অটো চেপে ধর্মতলা উত্তরবঙ্গ বাসস্ট্যান্ডে গেলাম। কিন্তু টিকেট আর কেনা হলো না। কারণ, তখন অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল, তাই আরও আগে থেকেই টিকেট কাউন্টার বন্ধ।
টিকেট নিতে হলে সকাল ১০ টায় কাউন্টারে আসতে হবে। গাড়ি ছাড়বে দুপুর ২টায়। তা-ই হবে, টিকেট সংগ্রহ সকালেই হবে বললো, “কানাই।”
তারপর ধর্মতলা অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরি করে রাত ১০টায় ফিরে এলাম বাঘা যতীন। সেদিন আমাদের ভাগ্যটা ভালোই ছিল। কেননা, বাংলাদেশ থেকে ভারতের বাঘা যতীন আসলাম অনেক দিন হলো। অনেক দিনের মধ্যে এই প্রথম বাড়িওয়ালার ঘরে রাতের খাবার কপালে জুটলো।
সবাই একসাথে বসেই রাতের খাবার খেয়েছিলাম। খাবার শেষে বাড়িওয়ালার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দিলাম, আগামীকাল বোনের বাড়ি রওনা দিচ্ছি। সেই সাথে ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্যও মিনতি করেছিলাম।
আমার কথা শুনে বাড়িওয়ালী খুশি হলেও, তার ছেলে-মেয়ে দুটি খুশি হয়নি। বলল, “দাদা সেখানে সমস্যা হলে আবার আমাদের এখানে চলে এসো।”
মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিয়ে কানাই-সহ তাদের ঘর থেকে বেড়িয়ে এলাম।
সেদিন রাতে আর আমার ঘুম হয়নি। সারারাত শুধু ছটপট করেছিলাম, নতুন জায়গায় যাবো বলে। দিদির বাড়ি নিয়ে চিন্তার শেষ ছিলো না, আমার!
❝দিদির যখন বিয়ে হয়েছিল, তখন আমার বয়স ছিলো মাত্র দেড় বছর। যা আমার মায়ের মুখে শোনা। আর এখন আমার বয়স ৩০ বছর পার হতে চলছে। দিদি আমার সামনে আসলে, আমি নিজেই দিদিকে চিনতে পারবো না। আর দিদি আমাকে চিনবে, এটাতো প্রশ্নই ওঠে না। শুনেছি আমার ভাগিনা ভাগ্নি ৪ জন। তারাও আমাকে চিনবে না। পরিচয় দেওয়ার পরও চিনবে না।❞
এরকম ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ার পর কখন যে রাত ভোর হয়ে গেল, একটু টেরও পাইনি। সকাল হতে না হতেই ঘুম থেকে ওঠে হাত মুখ ধুয়ে রেডি হয়ে আছি। অপেক্ষা শুধু কানাই'র জন্য। কিন্তু কানাই ঘুম থেকে উঠছে না দেখে, আমি হাত-মুখ ধুয়ে বাইরে গেলাম, চা-দোকানে।
কানাই ঘুম থেকে জেগে বুঝতে পেরেছে যে, আমি কোথায় আছি। ও মুখহাত ধুয়ে সোজা চা-দোকানে উপস্থিত। আমি তখন চা পান করছিলাম। কানাই আমার সামনে এসে দোকানদারকে এককাপ চা দিতে বললো।
আমাকে বলল, “তাড়াতাড়ি করে চা শেষ কর, টিকেটের জন্য যেতে হবে।”
ওর কথা শুনে একটু তাড়াতাড়ি-ই চা শেষ করলাম। চেয়ের দাম দিয়ে রওনা হলাম, টিকেট সংগ্রহের জন্য ধর্মতলা। একটা অটো চেপে গেলাম ধর্মতলা।
উত্তরবঙ্গের সরকারি লাল বাস। এই বাসগুলোকে সবাই বলে রকেট। বিশাল বড় গাড়ি। দেখতেও খুব সুন্দর! চলেও দ্রুতগতিতে! টিকেটের মূল্য ভারতীয় ২৬০টাকা। টিকেটের দাম কানাই নিজের পকেট থেকেই দিয়েছিলো।
টিকেটের দামটা ও আর আমার কাছ থেকে নেয়নি। গাড়ি ছাড়ার সময় দুপুর ২ টায়। এর আগে থেকেই গাড়ির সামনে হাজির থাকতে হবে। তখন সকাল ১১ টার মতো বাজে। তাড়াতাড়ি আবার চলে গেলাম বাঘা যতীন। বাঘা যতীন গিয়ে তাড়াতাড়ি স্নান করে রেডি হলাম।বাড়িওয়ালার ঘরে তখনও দুপুরবেলার রান্না হয়নি।
বেলা ২ টার আগে আর রান্না হবার সম্ভাবনাও ছিলো না। এটা কানাইও টের পেয়েছিল। ও বুঝতে পেরেছিল আমাকে না খেয়েই রওনা দিতে হবে। তাই কানাই তাড়াতাড়ি করে একটা দোকানে গেলো। দোকান থেকে আমার জন্য একটা পাউরুটি কিনে আনলো। যাতে কিছু না খেয়ে ঘর থেকে বের না হই।
তখন ঠিক দুপুর ১২টা। তাড়াতাড়ি অর্ধেকমত রুটি খেয়ে রেডি হলাম। কানাই'র দু’বোন ঘরের বাইরে অপেক্ষা করছে, বিদায় জানানোর জন্য। ওদের মনটাও খুব খারাপ! তা ওদের মুখের দিকে চেয়েই বুঝতে পেরেছিলাম। সাথে আছে বাড়িওয়ালার পরিবারবর্গ।
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঘর থেকে বের হলাম। একটা অটো চেপে গেলাম ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ড। তখন সময় ১টা। গাড়ি তখনও বাসস্ট্যান্ডে আসেনি। আসবে ঠিক টাইম মতো। এই ফাঁকে দুইজনে গেলাম কানাই’র পরিচিত একটা দোকানে। দোকানটা হলো শাড়ি কাপড়ের দোকান।
কানাই আমার দিদির জন্য একটা শাড়ি কিনে দিয়ে বলল, “এটা দিদিকে দিবি। হাত খালি, নাহয় জামাইবাবুর জন্যও একটা কিছু দিতাম।”
আমি আর কিছু বলিনি, চুপচাপ শাড়িখানা ব্যাগের ভেতর ভরে নিলাম। এরপর তাড়াতাড়ি করে চলে এলাম বাসস্ট্যান্ড।
এসময়ের মধ্যেই বাস রেডি হয়ে স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পরেই স্ট্যান্ড ত্যাগ করার প্রস্তুতি চলছে। কানাই আমাকে নিয়ে বাসে উঠে সিটে বসিয়ে দিল। আর যাবার পথে রাস্তার করনীয় বিষয়াদি কী কী, তা বুঝিয়ে দিল। ঠিক টাইম মতোই বাস স্ট্যান্ড থেকে বীরপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল।
কোলকাতা শহর পার হবার পরপরই শুরু হলো জ্যাম। কী কারণে যে, এই জ্যামের সৃষ্টি তা আর বুঝতে পারিনি। আর আমি বুঝবো-ই-বা কেমন করে। আমিতো সেখানে অতিথি মাত্র। রাত ১০টায় গিয়ে পৌঁছলাম চব্বিশ পরগনা কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড।
একটা বড় হোটেলের সামনে বাস থামলো। একএক করে বাসের সব যাত্রী নামল। সাথে আমিও নামলাম। এই কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের খাবারের হোটেল অনেক আছে। রাস্তার এপার-ওপারে অনেক রাত্রিকালীন দোকানও চোখে পড়লো।
বাস থেকে নেমেই দেখাছি, সবাই যারযারমত বিভিন্ন হোটেলে ঢুকছে। আমিও একটা হোটেলে ঢুকে আমার পছন্দমত কিছু খেলাম। সেখানে প্রায় ১ ঘণ্টা যাত্রা বিরতির পর, আবার রওনা দিল বীরপাড়ার উদ্দেশে।
সারারাত বাসেই বসেবসে ঝিমলাম। মাঝেমধ্যে কয়েকটা জায়গায় ভারতীয় বিএসএফ গাড়ি তল্লাসি করেছে। তবে আমি তেমন কোনও ঝামেলায় পড়িনি। আর পরবো-ই-বা কেন? আমার ভাষা তো একেবারে কোলকাতার মানুষের মতো। তাই পাসপোর্ট বিহীন হলেও, মনে সাহস ছিল অনেক বেশি।
পরদিন দুপুর ১২টার সময় পৌঁছলাম শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি হলো, দার্জিলিং জেলার একটা শহর। এই শিলিগুড়ি হয়েই দার্জিলিং, নেপাল, ভুটান যাওয়ার পথ। শিলিগুড়ি যাত্রাবিরতি হবে প্রায় ১ঘণ্টার মতন। এতো অনেক সময়।
অনেকে আবার বাসস্ট্যান্ডের সাথে থাকা মার্কেটও যাচ্ছিলো, কিছু কেনা-কাটা করার জন্য। কিন্তু সেখানকার কোনও মার্কেট আমার চেনাজানা ছিলো না বিধায়, আমি আর কোনও দিকে গেলাম না। আমি খুঁজতে ছিলাম চা'র দোকান।
একটা দোকান থেকে চা-বিস্কুট খেয়ে আবার বাসে উঠে বসলাম। সময়মত বাস শিলিগুড়ি থেকে ছেড়ে যাচ্ছে বীরপাড়ার উদ্দেশে। তখন বাসের ভেতরে যাত্রীর সংখ্যা ছিলো আমাকে নিয়ে হবে ১০ থেকে ১২ জনের মতন। বীরপাড়া যেতে সময় লাগল প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো। বীরপাড়া পৌঁছলাম দুপুর ২টায়। বাস থেকে বীরপাড়ার মাটিতে পা রাখলাম।
বীরপাড়া হলো, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি জেলার একটা থানা এলাকা। এই জায়গাটির তিনদিকে মিশে আছে ভুটান। ভুটানের পাহাড় ঘেঁষা সমতলভূমি, আর চা-বাগানের জন্য বিখ্যাত এই বীরপাড়া। বীরপাড়া বাজারটি ভারতের হলেও, এই বাজারে বেশিরভাগ দোকানদার, আর খরিদদার হলো ভুটানি।
মোট জনসংখ্যার মধ্যে একতৃতীয়াংশ ভুটানি আর নেপালি। মোট কথা ওই এলাকায় এই দুই দেশের মানুষেরই রাজত্ব। বীরপাড়া এলাকায় ভারতীয় টাকা আর নেপালি, ভুটানি টাকার মান সমান সমান। ভারতীয় টাকার চাইতে ভুটানের টাকাই বেশি চলে।
বাস থেকে নেমেই এদিক-সেদিক তাকাচ্ছিলাম। আমার সাথে ছিলো বাংলাদেশ থেকে নেওয়া কেবলমাত্র একটা ব্যাগ। ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে বীরপাড়া বাজারের ভেতরে গেলাম, কিছু মিষ্টি কেনার জন্য। জীবনে এই প্রথম বড়দি'র বাড়িতে আসা।
খালি হাতে যাওয়াটা কেমন যেন ভালো দেখায় না। তাই কেজি দুএক মিষ্টির জন্য মিষ্টির দোকান খুঁজছিলাম। সাথে টাকার সংখ্যাও বেশি একটা ছিলো না! তবুও খালি হাতে যাওয়া ঠিক হবে না বলে মনে মনে ভাবছিলাম!
গেলাম একটা মিষ্টির দোকানে। জিজ্ঞেস করলাম, “প্রতি কেজি মিষ্টির মূল্য কত?”
দোকানদার বললো, “২৫ টাকা কেজি।”
মনে মনে বলছিলাম, “বাঁচা গেল! আমার সাথে যেই টাকা আছে, তা দিয়ে বেশ হয়ে যাবে!”
দোকানদারকে বললাম, “চার কেজি মিষ্টি দিন।” দোকানদার চার কেজির কথা শুনে দোকানদার একটু অবাকই হলেন।
তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আজ্ঞে দাদা ঠিক করে বলুন তো কয় কেজি মিষ্টি নিবেন?”
দোকানদার অবাক হবার কারণ, সেখানে দুই কেজি মিষ্টি একসাথে কেউ কিনে না। আর আমি চাচ্ছিলাম চার কেজি! বিরাট ব্যাপারস্যাপার মনে হচ্ছিল দোকানদারের কাছে। তাই আমাকে ফের জিজ্ঞাসা, “ঠিক করে বলুন ক’কেজি নিবেন?”
আমি আবারও বললাম, “আমাকে ভালো দেখে চার কেজি মিষ্টি মেপে দিন। আমি আপনাকে মোট মূল্য হতে ১০টাকা কম দিব।”
আমার কথা শুনে দোকানদার হেসে বললেন, “তা দিবেন দাদা, তো আপনি যাবেন কোথায় শুনি?”
আমি বললাম, “আমি রবীন্দ্র নগর কলোনি যাবো।”
দোকানদার মিষ্টি মাপছে, আর আমকে জিজ্ঞেস করছে, “রবীন্দ্র নগর কলোনিতে আপনার কে থাকে দাদা?” বললাম, “আমার বড়দি।”
আবারও প্রশ্ন, “আপনার বড়দি’র স্বামীর নাম কী দাদা?” বললাম, “অমূল্য রতন পাল। আপনি কি চেনেন?” দোকানদার জিজ্ঞেস করলো, “আপনার জামাইবাবু কী করে?”
বললাম, “শুনেছি তামাকের ব্যবসা করে দাদা। তাও অনেক বছর আগের কথা। এখন যে কী করে, তা আমি সঠিকভাবে বলতে পারছি না। আপনি কি চেনেন?”
দোকানদার জিজ্ঞেস করলো, “আজ্ঞে কী বললেন! তামাকের ব্যবসা? আপনার ভাগিনা ভাগ্নিদের নাম জানেন? জানলে বলুন।”
বললাম, “ওরা তিন ভাই এক বোন। ওদের নাম: উত্তম, গৌতম, অষ্টম ও অনিমা।”
দোকানদার বললো, “আ-রে দাদা আপনার জামাইবাবুকে তো সবাই রতন পাল নামে ডাকে। আপনার দুই ভাগিনা গ্রেজে কাজ করে। এক ভাগিনা গাড়ির বড় মিস্ত্রি। আপনার বাড়ি মনে হয় বাংলাদেশে?”
আমি আর দোকানদারের সাথে মিথ্যা বলতে পারলাম না। আমি বললাম, “হ্যাঁ দাদা আমার বাড়ি বাংলাদেশ। আমি আজ থেকে ১৫ দিন আগে একটা কাজের আশায় কোলকাতা এসেছিলাম। কাজটা হয়নি। তাই দিদির বাড়ি আসা।”
দোকানদার আমার কথা শুনে বললেন, “বসেন দাদা, বসেন। আগে কিছু খাবার খেয়ে নিন। আমি সাথে করেই আপনাকে আপনার দিদির বাড়ি পৌঁছে দিব।”
এই বলেই দুটি মিষ্টি একটা প্লেটে করে আমার সামনে এনে দিয়ে বললেন, “আজ্ঞে দাদা ঝটপট খেয়ে ফেলুন। আমি রিকশা দেখছি।”
আমি তখন অচেনা জায়গায় অপরিচিত লোক হলেও, আমি খুশিতে বসে বসে মিষ্টি খাচ্ছিলাম! মনে অনন্দও পাচ্ছিলাম! আবার চিন্তাও লাগছিলো! চিন্তা শুধু একটাই। তা হলো, যদি বড়দি আমাকে না চেনে? যদি তাদের বাড়িতে জায়গা না দেয়? যদি আবার কোলকাতা ফিরে যেতে হয়? এসব বিষয় নিয়েই চিন্তা। তারপরও ভয় পাচ্ছিলাম না। কারণ, এসেছি যখন একটা বিহিত হবেই হবে। এই মনোবল নিয়েই মিষ্টি দুটি খাচ্ছিলাম জোরেশোরে।
এই সময়ের মধ্যেই দোকানদার রিকশা নিয়ে দোকানের সামনে হাজির হলো। রিকশাওয়ালাও আমার জামাইবাবুর পরিচিত ছিলো। দোকানদার আমাকে বললো, “দাদা এই রিকশাওয়ালা আপনার জামাইবাবুর বাড়ি নিয়ে যাবে। ও খুব ভালো করে আপনার জামাইবাবুকে চেনে। পরিচিত রিকশা যখন পেয়েছি, সাথে আর আমার যেতে হবে না।”
আমি আমার পকেট থাকে ভারতীয় একশো টাকার একটা নোট বের করে দোকানদারের হাতে দিলাম। দোকানদার বললো, “এই টাকা থেকে আপনাকে আর টাকা ফেরৎ দিচ্ছি না দাদা। আপনার রিকশা ভাড়া আর দিতে হবে না। ওর ভাড়া আমি দিয়ে দিব।”
এই কথা বলেই রিকশাওয়ালাকে বললো, “শোন বাপু, তুমি সাবধানে রতন পালের বাড়ি যাবে। বাড়ি গিয়ে, তার স্ত্রীর কাছে এই লোকটাকে পৌঁছে দিবে। জয়বাংলার লোক। এখানে নতুন। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে তুমি বাপু আমার কথা বলে দিও।”
রিকশাওয়ালা আমার কেনা চার কেজি মিষ্টি দোকান থেকে এনে, তার রিকশার উপরে রাখলো। আমি দোকান থেকে রিকশায় গিয়ে বসলাম। দোকানদার রিকশার সামনে এসে আমকে বললো, “সন্ধ্যার পর এখানে আসলে আমার দোকেনে আসবেন দাদা। আমি খুবই খুশি হবো।” আমি বললাম, “ঠিক আছে দাদা আসবো, কথা দিলাম।”
এই বলেই রিকশাওয়ালাকে বললাম, “আপনি এবার আমার দিদির বাড়ির নিয়ে চলুন। রিকশাওয়ালা ট্রিং ট্রিং করতে করতে রবীন্দ্র নগর কলোনির দিকে যাচ্ছে। ফাঁকা রাস্তা। গাড়ি নেই। নেই কোনও যানজট বা জ্যাম। রাস্তার দুই দ্বারে বড়বড় পুরানো গাছ।
পুরো এলাকায় রিকশাও হবে হাতে গোনা কয়েকটা। রিকশাও বেশি সুন্দর না। কোনরকমভাবে তিনটে চাকা লাগানো আছে। হুকবডি নেই বললেই চলে। যেতে যেতে রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলাম, “তার দৈনিক ইনকাম কত?”
উত্তরে রিকশাওয়ালা বললো, “সারাদিনে ১৫–২০ টাকার মতো ইনকাম হয়।”
এই টাকা দিয়েই তার সংসারে চারজন খানেওয়ালার খরচ। তারপরও তার অভাব নেই! এই টাকা দিয়েই তার ছোট সংসার খুব সুন্দরভাবে চলছে। জানলাম রিকশাওয়ালার কাছ থেকে।
চলবে...
ব্লগ ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
nitaibabunitaibabu@gmail.com