আমি ঘৃণিত না কি তুমি?
আমি ঘৃণিত, না কি তুমি?
ভূমিকা
সমাজের নানা স্তরে অবহেলিত, দুর্বল, দরিদ্র মানুষেরা প্রায়শই কেবলমাত্র জন্মসূত্রে, ধর্মে, পেশায় বা চেহারায় 'ঘৃণিত' হিসেবে চিহ্নিত হন। অথচ তাদের জীবনযাপন, শ্রম ও আত্মত্যাগে সমাজ এগিয়ে চলে। এই কবিতাটি সেইসব প্রান্তিক মানুষের আত্মজিজ্ঞাসা, প্রতিবাদ এবং আত্মসম্মানের এক নিঃশব্দ চিৎকার— যারা বলে, "আমি মানুষ, কিন্তু তবুও কেন সমাজের চোখে অমানুষ?"
আমি হিন্দু, আমি নিম্নবর্ণ—
তোমার চোখে আমি নোংরা?
তুমি কি জানো, বিশ্বাসের নামে
তোমার মনটাই কত অন্ধ অন্ধকার?
আমি গরিব, ভাত চেয়ে খাই,
তুমি ধনী, নিত্য ভোজে মত্ত,
আমি রিকশা চালাই, তুমি চড়ো—
তবু ঘৃণা শুধু আমার ঠিকানায় জড়ো!
আমি চাকরি করি, বেঁচে থাকি,
তুমি কর বস, দাও আদেশ,
আমার শ্রমে চলে তোর অফিস—
তবু আমাকেই বলো ‘পরাধীন’, কেন রে এত নিষ্ঠুর তেজ?
আমি বস্তির মানুষ, ঘরের নেই ছাদ,
তুমি ফ্ল্যাটে, এসিতে জমে বরফ,
আমার ঘামেই গড়ে ওঠে শহর—
তবু আমি উদ্বাস্তু, তুমি কি তবে ‘নাগরিক’ সত্যরূপ?
আমি সংখ্যালঘু, আমি একা,
তোমার সংখ্যায় আমি ক্ষয়,
তুমি সংখ্যায় বড়, তবু মানবতায়—
তুমি কি বড়ো, নাকি শুধু সংখ্যার জয়?
আমি মানুষ, হ্যাঁ, ঠিক শুনছো—
রক্ত আমারও লাল,
আমি গরিব বলে নয়,
তোমার হৃদয়টাই আসল জঞ্জাল।
শেষ প্রশ্ন
আমি ঘৃণিত? নাকি এই সমাজটাই বিকৃত?
আমার চেহারা দেখো না— মনটা দেখো,
তবে বুঝবে, আমি শুধু মানুষ,
তোমারই মতো— একশত ভাগ সত্য, খাঁটি মানুষ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
nitaibabunitaibabu@gmail.com