পোস্টগুলি

একবার যে ইতিহাস রচিত হয়, তা কখনো মুছে ফেলা যায় না

ছবি
  একবার যে ইতিহাস রচিত হয়, তা কখনো মুছে ফেলা যায় না কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সেই ইতিহাসকে অস্বীকার করলেও, তা তার আপন মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে থাকে। কারণ ইতিহাস কেবল কিছু ঘটনা নয়, তা একটি জাতির সম্মিলিত চেতনা, ত্যাগ এবং সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা অর্জন তেমনই এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস, যা বাঙালি জাতিকে বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দিয়েছে। ১৯৭১ সালে, দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন একটি দেশ পেয়েছি। এটি ছিল আমাদের পূর্বপুরুষদের অসীম ত্যাগ ও সাহসের ফসল। সেই ইতিহাসকে বারবার বিকৃত করার চেষ্টা করা হলেও তা যেমন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়নি, তেমনি ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ও একটি অমোঘ সত্য। ২০২৪: একটি নতুন ইতিহাসের জন্ম ২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া একটি শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলন ধীরে ধীরে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয় এবং স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটায়। এই আন্দোলন প্রমাণ করে যে, সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ শক্তি কতটা অপ্রতিরোধ্য হতে পারে। এই ইতিহাস কোনো একক ব্যক্তির বা দলে...

জীবন থাকতেও ফেসবুক মৃত্যুর পরও ফেসবুক

ছবি
লেখার শিরোনাম দেখে হয়তো অনেকেই ভাবছেন, "জীবন থাকতেও ফেসবুক, মৃত্যুর পরও ফেসবুক", তা কী করে হয়? হ্যাঁ, সত্যি তা-ই হয়! কীভাবে হতে পারে তা নিজে ভাবার আগে দয়া করে আমার আজকের এই লেখাটা মনোযোগ সহকারে পুরোটা পড়ুন, তা হলেই আপনারা পরিষ্কার হয়ে যাবেন। তো চলুন, শুরু করা যাক! বন্ধুরা, বর্তমানে ফেসবুকে একটা আইডি নেই এমন মানুষ কিন্তু খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ স্কুলের ছাত্র হোক, কলেজের ছাত্র হোক, চাকরিজীবী হোক যেকোনো পেশার লোকই হোক না কেন, ফেসবুকে একটা আইডি সবারই চাই চাই৷ এমনকি লেখাপড়া না জানা অনেক লোকও কিন্তু বর্তমানে ফেসবুকে পারদর্শী হয়ে উঠছে৷ তা কি আমি মিথ্যে বলছি? মোটেই না। যা বলছি, তা একশোতে একশো সত্য এবং বাস্তব! আমার দেখা এমন লোক আছে, নিজের নাম লিখতে কলম ভাঙে চারটে! ওই লোকও বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারী। তা-ও আবার তার ফ্রেন্ড লিস্টে হাজার চারেক ফ্রেন্ড! ওইসব ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে জানতে চাইলাম, "কীভাবে মেসেজ দেন? কীভাবে আপনার অনুভূতিগুলো বন্ধুদের জানান? কীভাবে অন্যের একটা ছবির উপর মন্তব্য করেন?" উত্তর পেলাম, "আরে বাবু এটা কোনো ব্যাপারই না! শুধু nice, good, good...

মাহে রমজানে করণীয়: সিয়াম সাধনার প্রকৃত অর্থ ও আমাদের মানবিক দায়িত্ব

ছবি
  🕌 মাহে রমজানে করণীয়: সিয়াম সাধনার প্রকৃত অর্থ ও আমাদের মানবিক দায়িত্ব রমজান মাস – এক পবিত্র আত্মশুদ্ধির সময়, এক সংযমের পাঠশালা। সারা বিশ্বে কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মাসে রোজা রাখেন, নামাজ আদায় করেন, ইবাদতে মগ্ন থাকেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো—রমজান কি শুধুই উপবাস? শুধু সূর্য ওঠার আগে সেহরি খাওয়া আর সূর্যাস্তের পর ইফতার করার নামই কি রোজা? আমার মনে হয় না। রমজান হচ্ছে একটি উপলব্ধির মাস। একটি আত্মজিজ্ঞাসার মাস। এমন একটি মাস যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—এই পৃথিবীতে শুধু নিজের জন্য নয়, অপরের জন্যও বাঁচতে হবে। 📖 মহানবীর উপলব্ধি ও সিয়াম সাধনার নৈতিক ভিত্তি আমার বিশ্বাস, বিশ্বনবী (সা.) যখন খাবার খেতেন, তখন তাঁর আশেপাশের গরীব, না খেয়ে থাকা মানুষদের কথা মনে করতেন। একদিন হয়তো তাঁর কোনো উম্মত সারাদিন না খেয়ে কাটাচ্ছে—এই ভাবনা তাঁকে কাঁদাতো। সেই ভাবনার গভীরতা থেকেই হয়তো মহান আল্লাহর কাছে নবীজি আহ্বান জানিয়েছিলেন এমন একটি মাসের—যেখানে মানুষ উপবাস থাকবে, অনুভব করবে ক্ষুধার জ্বালা, অনুধাবন করবে দরিদ্রতার কষ্ট। তখনই মহান আল্লাহ তা’আলা মানব জাতির জন্য রমজান মাসকে ফরজ করেন। কিন্তু সেই আত্মশুদ...

আমার ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন কেন? আমি তো ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই জন্ম নিয়েছি

ছবি
  🕉️ আমার ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন কেন? আমি তো ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই জন্ম নিয়েছি! আমার স্কুলজীবনে, এমনকি প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও বহুবার এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি — কেউ কেউ আমাকে জোর করে ধর্ম পরিবর্তনের কথা বলেছে । কখনো বন্ধুর ছদ্মবেশে, কখনো হুমকি বা ভয় দেখিয়ে। বলা হয়েছে, “তুমি হিন্দু ধর্মে জন্মালেও এখন আমাদের ধর্মে আসো। নইলে তুমি পথভ্রষ্ট, নরকে যাবে, তোমার মুক্তি নেই।” কিন্তু আমার প্রশ্ন একটাই — যদি আমাদের সবার সৃষ্টিকর্তা একজনই হন , তবে তিনি কেন আমাকে হিন্দু পরিবারে জন্ম দিলেন? কেন আমাকে এই ধর্ম, এই সংস্কৃতি, এই বিশ্বাসের চেতনায় গড়ে তুললেন? আমি যদি আজ ধর্ম ত্যাগ করি, তাহলে সেই সৃষ্টিকর্তার কাছেই বা কী জবাব দেব? 🌼 জন্ম পরিচয় সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা একজন মানুষ তার জন্মস্থানের জন্য দায়ী নয়, যেমন তার ধর্ম বা জাতির জন্যও নয়। জন্ম পরিচয় আসে ঈশ্বরের ইচ্ছা থেকেই। আমি হিন্দু — কারণ ঈশ্বর আমাকে সেই পরিচয়ে পাঠিয়েছেন। সুতরাং এই পরিচয়কে ত্যাগ করা মানে, যেন আমি তাঁর সিদ্ধান্ত অস্বীকার করছি। 🕉️ হিন্দু ধর্ম কি কেবল একটি বিশ্বাস? না, এটি সহিষ্ণুতার দর্শন হিন্দু ধর্ম কখনো কাউকে জোর করে ধর্মে আনার চেষ্টা ক...

আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি: স্বাধীনতা দেখেছি

ছবি
  🕊️ আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি: স্বাধীনতা দেখেছি! মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তখন আমার বয়স মাত্র আট বছর। শিশুমনে তখনকার ভয়, আতঙ্ক আর গর্ব—সব মিশে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে আছে আজও। আমি তখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। বয়স কম হলেও বুঝতাম অনেক কিছু। চোখের সামনে দেখতাম কেমন করে আমাদের গ্রামে হঠাৎ হঠাৎ ছুটে আসে আতঙ্ক আর মৃত্যুভয়। আমার মা—এক অসাধারণ সাহসিনী—সন্ধ্যা নামার আগেই আমার তিন বোনকে মাটির ঘরের পেছনের সুপারি বাগানে খুঁড়ে রাখা গর্তে লুকিয়ে রাখতেন। পুরো রাত তারা সেখানেই কাটাতো, ঠান্ডা, অন্ধকার আর আতঙ্কের মধ্যে। কাকডাকা ভোরে মা গিয়ে আবার সেই গর্ত থেকে টেনে তুলতেন, যেন একটু প্রাণ ফিরে পেত তারা। আমার বড় জেঠা ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি পুলিশ সদস্য। তাঁর সাহসী চরিত্র এবং স্থানীয়দের প্রতি সহমর্মিতা ছিল অনুকরণীয়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের বাড়িতে আসতেন। জেঠার সঙ্গে বসতেন, চা খেতেন, আলোচনা করতেন। ছোট্ট আমি তখন চুপিচুপি গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা স্টেনগান কিংবা রাইফেলের পাশে দাঁড়াতাম। সেগুলো স্পর্শ করতাম খুব ধীরে, যেন সাহস আর ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখছি। তারপর এলো সেই অবি...

মোবাইলের যুগে ডাকবাক্স শুধুই একটা পরিত্যক্ত লোহার বাক্স

ছবি
গত বছর সাতেক আগে একটা জরুরি কাজে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিলাম। যাচ্ছিলাম অটো চড়ে। হাজীগঞ্জ ফেরিঘাট পেরিয়ে যখন কিল্লারপুলের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, রাস্তার বাম পাশে ময়লা-আবর্জনার মধ্যে একটা ডাকবাক্স দেখতে পেলাম—যা এখনও একইভাবে ঠিক আগের জায়গাতেই আছে। ডাকবাক্সটি অনেক আগে থেকেই এখানে বসানো হয়েছিল। তবে আগে ডাকবাক্সটির সামনে এত ময়লা-আবর্জনা ছিল না, সবসময় পরিষ্কারই ছিল। বর্তমানে ডাকবাক্সটি পড়ে আছে অযত্নে অবহেলায়। ডাকবাক্সটি ময়লার স্তুপের উপর ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। বাক্সের চারপাশে জঙ্গলে একাকার। দেখে মনে হয়, হয়তো মাসে না হয় বছরে একবার এই ডাকবাক্সটির তালা খোলা হয়।  ডাকবাক্সটির অবস্থান হাজীগঞ্জ কিল্লারপুল সংলগ্ন ড্রেজার সংস্থার মেইন গেট ঘেঁষা। ডাকবাক্সটি দেখে নিজের স্মৃতিতে থাকা আগেকার কথা মনে পড়ে গেল। একসময় এদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে ডাকবাক্স ছিল খুবই সম্মানী বস্তু। এই ডাকবাক্স ছিল অগণিত মানুষের সুখ-দুঃখের সাথি। এসবের জ্বলন্ত সাক্ষী আমি নিজেই। দেখতাম, একটা চিঠির অপেক্ষায় আমার মা ডাকপিয়নের বাড়িতেও দৌড়াতেন। বাবার প্রেরিত চিঠি মা হাতে পেয়ে অস্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেন। চিঠি হাতে পেয়ে ডাকপিয়নকে কত না অনুরোধ করতে...

ঘুমের ঘোরে চাঁদের বুড়ির সাথে সাক্ষাৎ

ছবি
 স্বপ্ন কে না দেখে? স্বপ্ন দেখে আর স্বপ্ন নিয়েই তো মানুষ বেঁচে থাকে। নিজেও বেঁচে আছি স্বপ্ন দেখে! মানুষের মুখে অনেক শুনেছি ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখার কথা। অনেক মানুষকে বলতে শুনেছি, “রাতে স্বপ্ন দেখলাম, আমেরিকা গিয়ে ঝালমুড়ি বিক্রি করছি। সেই স্বপ্ন আমার ঘুম ভাঙার সাথে সাথেই শেষ!” আবার কেউ বলছিল, “রাতে স্বপ্নে দেখলাম, রাশিয়ার সাবমেরিনে চড়ে আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে গিয়ে মণিমুক্তা খুঁজছিলাম। হঠাৎ গিন্নির শরীরের ধাক্কায় ঘুমটা ভেঙে গেলো। তারপর দেখি আমি আমার ছেঁড়া কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে আছি!” মানুষের মুখে এমন হাজারো স্বপ্নের কথা বারংবার শুনেছি। মানুষের মতো প্রতি রাতে ঘুমের ঘোরে নিজেও অনেক স্বপ্ন দেখেছি। তবে অন্যসব মানুষের মতো নিজে কখনো সাবমেরিনে চড়ে মহাসাগরের তলদেশে যাইনি, নিরুদ্দেশ হয়ে যাবো বলে। যদি সাবমেরিনে চড়ে পানির নিচে গায়েব হয়ে যাই, তাহলে আমার দুখিনী গিন্নি সারাজীবন আমার জন্য কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাবে। তাই অসহায় গিন্নির কথা চিন্তা করে স্বপ্নে কখনো সাবমেরিনে চড়িনি। সাবমেরিনের স্বপ্ন কখনও দেখিওনি। তবে হ্যাঁ, একবার নাসার মহাকাশযানে চড়তে চেয়েছিলাম। অত্যাধুনিক রকেটে চড়ে চাঁদের দেশে যেতে চেয়েছিল...