মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে এসে মানুষ কেন জীবনের ভালো-মন্দ বিশ্লেষণ করে?
মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে এসে মানুষ কেন নিজের ভালো-মন্দ বিচার করে?
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ কেন এমন আত্মচিন্তা করে না — কিশোর থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বয়সভিত্তিক যত কারণ আছে, উদাহরণসহ সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা।
সংক্ষিপ্ত উত্তর
মৃত্যুর কাছে পৌঁছালে সময় ও সুযোগ সীমিত মনে হওয়ায় মানুষ অতীত ফিরেও দেখে; ভালোর—মন্দের বিচার করে। কিশোর ও মধ্যবয়সে জীবনযাপনের আলাদা মনস্তত্ত্ব, দায়িত্ব ও মানসিকতা থাকে—তার ফলে সেই গভীর আত্মবিশ্লেষণ সাধারণত পরে ঘটে।
কেন কিশোর থেকে বৃদ্ধ বয়সে সাধারণত সেটা হয় না?
- ভবিষ্যৎমুখী মানসিকতা: কিশোররা স্বপ্ন দেখে, সম্ভাবনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে; জীবনের শেষ নিয়ে ভাবার প্রবণতা কম থাকে।
- তারুণ্যের আবেগ ও রোমাঞ্চ: আবেগ, অনুসন্ধিৎসা ও পরীক্ষায় মগ্ন হওয়ার কারণে গভীর নৈতিক আত্মপর্যালোচনা পিছনে পড়ে যায়।
- দায়বদ্ধতা ও ব্যস্ততা (মধ্যবয়স): পরিবার, ব্যবসা ও দায়িত্ব পালনে আত্মচিন্তার জায়গা কমে আসে।
- আশার শক্তি (বার্ধক্য): যদিও শারীরিক দুর্বলতা আসে, অনেকেই এখনও ‘‘আর কয়েক বছর’’ ভাবেন—তাই শেষ রিভিউ পিছিয়ে পড়ে।
মৃত্যুর আগে কেন বিশ্লেষণ জোরালো হয়?
সময় আলাপ-সংলাপ শেষ হয়ে আসায়, অজানার উদ্বেগ ও মৃত্যুর ভয় মানুষকে নিজের কর্মকাণ্ড, সম্পর্ক ও অনুশোচনার দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসে। অতীতের ন্যায়ভ্রান্তি বা অনুগ্রহ—সবই তখনই এলোচিত হয়।
উদাহরণ
কিশোর: দিনগুলো খেলাধুলা ও পড়াশোনায় কেটে যায়; সে ভাবে ‘‘সময় অনেক আছে’’ — তাই দীর্ঘদূরনের নৈতিক হিসাব-নিকাশ করে না।
তরুণ/মধ্যবয়স: একজন পিতার জীবনের লক্ষ্য হয়ে ওঠে সন্তানদের ভবিষ্যৎ—কাজের চাপে নিজের ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে গভীর চিন্তা ততটা হয় না।
বৃদ্ধাবস্থা (মৃত্যুর পূর্বাভাস): বিছানায় শুয়ে শেষ সময়ে একজন ব্যক্তি হয়তো ভাবে—"কথায় দিয়েছি, আর কত কথা বাড়িয়ে বলব? মানুষের কাছে দুঃখ দিলাম কি?" — তখন অনুশোচনা ও আত্মসমালোচনা প্রবল হয়।
চিন্তার পরিণতি
এই শেষ মুহূর্তের বিশ্লেষণ সবসময়ই বদল ঘটায় না; কেউ শান্তি পায়, কেউ অনুশোচনায় ডুবে যায়। তবে এটা স্পষ্ট—জীবনের বিভিন্ন সময়ে মানুষের মনস্তত্ত্ব ভিন্ন, আর তাতেই এই আচরণগুলোর কারণ লুকিয়ে আছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
nitaibabunitaibabu@gmail.com